Ticker

20/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

চাঁদা মামার দেশে ।। শ্রী গিরীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়

 

অনিলের বয়স মোটে ছয় বৎসর। এর মধ্যেই সে চাঁদা মামার আর চাঁদা মামার দেশের কত গল্পই শুনেছে। সেই সব গল্প শুনে চাঁদা মামার দেশে চাঁদা মামার কাছে যাবার জন্যে তার খুব ইচ্ছা হয়। তার মা যখন তার ছোট বোনটিকে—‘আয় আয় চাঁদ আয়' বলে ঘুম পাড়ান, তখন সে চাঁদ আসবে ভেবে আকাশের দিকে চেয়ে থাকে। কিন্তু কৈ—চাঁদতো আসে না।

অনিল মাকে জিজ্ঞাসা করে, মা, তুমি রোজ চাঁদকে ডাক, কিন্তু চাঁদতো আসে না। মা বলেন, তোমরাই যে আমার চাঁদ, আর আমার চাঁদে দরকার কি বাবা! কথাটা অনিলের পছন্দ হয় না। অনিল জিজ্ঞাসা করে, মা, চাঁদা মামার দেশে কি যাওয়া যায়? মা বলেন, যায় বৈকি বাবা। যারা খুব পুণ্যি করে, তারা চাঁদের দেশে যেতে পারে। অনিল বলে, মা, সেদিন আমি একজন কাণাকে একটা পয়সা দিয়েছিলাম, আমার তো তাতে পুণ্যি হয়েছে; তা আমি কি চাঁদের দেশে যেতে পারবো? মা হাসেন, বলেন, পারবে বৈকি বাবা, চাঁদ যে তোমাদের মত ছোট ছেলেদের বড় ভালবাসেন৷

শুনে অনিলের মনে বড় আহলাদ হয়। অনিল জিজ্ঞাসা করে, আচ্ছা মা, চাঁদা মামার দেশে কি করে যাওয়া যায়? মা বলেন, যারা খুব ভাল ছেলে হয়, বাপ-মার কথা শোনে, দুষ্টামি করে না, মন দিয়ে লেখাপড়া শেখে, তাদের জন্যে চাঁদা মামা পক্ষিরাজ ঘোড়া পাঠিয়ে দেন। অনিল জিজ্ঞাসা করে, চাঁদা মামার দেশ কেমন, সেখানে কি আছে মা? মা বলেন, সে চমৎকার দেশ। সেখানে তোমাদের মত কত সুন্দর সুন্দর ছেলে মেয়ে আছে, কত রকম সুন্দর পাখী হরিণ ময়ূর আছে, চমৎকার ফুল ফল আছে, সেখানে ক্ষুধা হলেই খাবার পাওয়া যায়, তৃষ্ণা হলেই জল পাওয়া যায়৷ সেখানে দুঃখ বলে কিছু নেই, কেবল সুখ। সেখানে কেউ কারুর সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ করে না, কেউ কারুর হিংসে করে না।

অনিল শোনে, শুনে চাঁদের দেশে যাবার জন্যে তার মনটা ব্যাকুল হয়ে ওঠে। অনিল জিজ্ঞাসা করে, আচ্ছা মা, চাঁদের কি কোন দুঃখ নেই? মা বলেন, আছে বৈকি বাবা, কখন কখন রাহু এসে চাঁদকে গিলে ফেলে। শুনে অনিলের দুঃখ হয়। অনিল জিজ্ঞাসা করে, রাহু কে মা? মা বলেন, রাহু একটা প্রকাণ্ড অসুরের মাথা, চাঁদের সঙ্গে তার চিরকালের বিবাদ।

শুনে অনিলের মনে বড় রাগ হয়। এমন সুখের দেশের চাঁদা মামাকে যে গিলে ফেলে, তাকে মেরে ফেলাই উচিত। অনিল বড় হয়ে একবার চেষ্টা করে দেখবে।

************

চমৎকার জ্যোৎস্না রাত্রি। আকাশে চাঁদ হাসছে, চারিদিকে অসংখ্য তারার মেলা। কতকগুলো শাদা আর কালো মেঘ আকাশে ভেসে চলেছে।

অনিল নিজের ঘরে বিছানায় শুয়েছিল। হঠাৎ বাইরে থেকে কে ডাকলে, অনিল, উঠে এস। তোমাকে নিয়ে যাবার জন্যে চাঁদা মামা আমাকে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

শুনে অনিলের যে কি আহ্লাদ হল, তা বলে বুঝান যায় না। অনিল তাড়াতাড়ি ভাল জামা কাপড় পরে বাইরে এসে দেখলে একটি ঘোড়া দাঁড়িয়ে আছে, তার পিঠের দুই দিকে দুখানি সুন্দর ডানা। অনিলকে দেখে ঘোড়া বললে, আমার পিঠে ওঠ, আমি তোমাকে চাঁদা মামার দেশে নিয়ে যাব৷ সেই কথা শুনে অনিল ঘোড়ার পিঠে উঠে বসল, আর ঘোড়াও অমনি শূন্য পথে উড়ে চলল। কত দেশ, কত পাহাড়, কত নদী, কত সমুদ্র পার হয়ে, শেষে ঘোড়া উপরে আকাশের দিকে উঠতে লাগল। আকাশের মেঘ ছাড়িয়ে, কত ছোট বড় নক্ষত্র পিছনে রেখে ঘোড়া উড়ে চলেছে। অনেকক্ষণ পরে দূরে চাঁদা মামার দেশ দেখা গেল৷

একটু পরেই ঘোড়া চাঁদা মামার দেশে গিয়ে থামল, অমনি অনিলও ঘোড়ার পিঠ থেকে লাফিয়ে পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে সেই দেশের ছেলেমেয়েদের নিয়ে চাঁদা মামা হাসতে হাসতে এলেন। সেই সব ছেলেমেয়েদের চেহারা অতি সুন্দর, আর সকলের পিঠেই পাখীর ডানার মত দুখানি করে ডানা।

চাঁদা মামা বললেন, এস এস অনিল, আমি ঘোড়া পাঠিয়ে দিয়ে তোমার জন্যে অপেক্ষা করছি।

অনিল বললে, দেখুন মামা বাবু—

অনিলের কথায় বাধা দিয়ে চাঁদা মামা বললেন, আমরা সেকেলে মানুষ, আজও বাবু হতে পারি নি বাবা। চা, চুরুট, চপ, কাটলেট এ সব খেতে না শিখলে, আর হাতে ঘড়ি, চোখে চশমা না থাকলে তো বাবু হওয়া যায় না। তা সে সব আমাদের কিছুই নেই। সেই জন্যে কেউ আর আমাদের বাবু বলে না, মশাই বলে। তা মামা মশাই কথাটা বেশ মিষ্টি শোনায় না। তুমি শুধু মামা বলেই ডেকো।

অনিল বললে, দেখুন মামা, অনেক দিন থেকে ইচ্ছে যে আপনার কাছে আসব, কিন্তু এতদিন সুবিধে ঘটে নি। আজ আপনি ঘোড়া পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বলে আসতে পেরেছি। নৈলে আমার মত ছোট ছেলে কি এতদূর আসতে পারে।

চাঁদা মামা এক গাল হেসে বললেন, তা কি পারে বাবা! ছোটরাও পারে না, বড়রাও পারে না। তবে বড়রা যদি খুব পুণ্যি করে, তা হলে আসতে পারে। কিন্তু সে আলাদা কথা৷ ছোট ছেলেমেয়েদের আমি বড় ভালবাসি। মায়েরা যখন কচি ছেলেমেয়েদের মুখে চুমো দেবার জন্যে আমায় আদর করে ডাকে, তখন আমার বড় আহ্লাদ হয়। ইচ্ছে করে ছুটে গিয়ে তাদের কচি মুখে চুমো খেয়ে আসি। কিন্তু আমার তো যাবার উপায় নেই৷

অনিল জিজ্ঞাসা করলে, আপনার যাবার উপায় নেই কেন মামা?

চাঁদা মামা বললেন, আমি যে বড় ঠাণ্ডা বাবা। এই আমার গায়ে হাত দিয়ে দেখ না, বরফের মত কন্ কন্ করছে। তোমাদের গরম দেশে গেলে আমি একেবারে গলে জল হয়ে যাব যে!

অনিল বললে, দেখুন, আমাদের দেশে করাতের গুঁড়ো ঢাকা দিয়ে বরফ রাখে, আর তার ওপর কম্বল চাপা দেয়। তাতে বরফ সহজে গলে না। তা আপনি খুব পুরু করে করাতের গুঁড়ো মেখে, তার ওপর গায়ে খুব গরম জামা দিয়ে চুমো খেয়ে আসতে পারেন তো।

চাঁদা মামা বললেন, তা কি হয় বাবা! আমি গায়ে জামা দিলে পৃথিবী রাত্রে অন্ধকার হয়ে যাবে, পূর্ণিমার চাঁদ আর কেউ দেখতে পাবে না। অনেক ফুল আছে, যে সব ফুল আমার আলোয় ফোটে, সে সব ফুল আর ফুটবে না৷

অনিল বললে, তবে আপনার গিয়ে কাজ নেই মামা৷ আমি তো আপনার দেশে এসেছি, আপনার কাছে থাকব।

চাঁদা মামা বললেন, তা থাকবে বৈকি বাবা, তোমার যত দিন ইচ্ছে তত দিন থাকবে। এখন চল কিছু খাবে, খাওয়া হলে পরে এই সব ছেলেমেয়েদের সঙ্গে খেলা করবে।

অনিলের খাওয়া হলে চাঁদা মামা বললেন, তুমি এখন খেলা করগে বাবা৷ আমায় এখন আকাশে উঠতে হবে, চাকরি বজায় রাখা চাই তো৷

অনিল বললে, সে কি মামা! আপনার আবার চাকরি কিসের?

চাঁদা মামা বললেন, বোকা ছেলে তাও জান না৷ আমার চাকরি বারমাস ত্রিশ দিন। কেবল অমাবস্যার দিন একটু ছুটি পাই। আপিসের কেরাণীর বরং ছুটি আছে, কিন্তু আমাদের ছুটি নেই। সূয্যি দাদার তো বছরের মধ্যে একদিনও কামাই করবার যো নেই।

অনিল জিজ্ঞাসা করলে, আচ্ছা মামা, সূয্যি মামা আপনার দাদা হন?

চাঁদা মামা বললেন, আরে পাগল ছেলে তাও জান না৷ ওই যে সূয্যি দাদা বললাম। তোমরা সূয্যি মামা আর চাঁদা মামা বল, তা দুই মামা ভাই নয়তো আর কি! বলেই চাঁদা মামা হাঃ হাঃ করে হাসতে লাগলেন।

অনিল বললে, মামা অত হাসছেন কেন? আমি ছেলে মানুষ কিনা, তাই সব কথা এখনও জানিনে। যত লেখাপড়া শিখব, ক্রমে সব জানতে পারব। তা সূয্যি মামার সঙ্গে আপনার ভাব কেমন মামা?

চাঁদা মামা বললেন, সে কথা আর জিজ্ঞাসা কর না বাবা, একেবারে সাপে নেউলে৷

অনিল বললে, সে কি কথা, ভাইয়ে ভাইয়ে ভাব নেই!

চাঁদা মামা বললেন, কি করে থাকবে অনিল! আমার দাদাটিকে জানত, সৰ্ব্বদা মেজাজ গরম, একটু ঠাণ্ডা মেজাজ কোন সময়ে দেখতে পাবে না। শীতকালে বেশীক্ষণ আকাশে থাকতে পান না, তাই মেজাজটা একটু কম গরম বলেই মনে হয়। কিন্তু কেউ বেশীক্ষণ রোদে বসে থাকলেই দাদা তাকে তাতিয়ে তোলেন৷ দাদাটি আমার পাগল হে পাগল, পাগল ছাড়া আর কি বলব। গ্রীষ্ম-কালে পাগলামিটে কি রকম বেড়ে ওঠে তা জানতো। পাগল বিষম গরম হয়ে পৃথিবীটে পুড়িয়ে দিতে চায়। গাছপালা সব শুকিয়ে দেয়, খাল বিল পুকুরের জল সব শুষে নেয়, তাতে সব মাছ মরে যায়। সব মাছ যদি মরে যায়, তবে কি খাবে বলতো?

অনিল বললে, ঠিক কথা বলেছেন মামা, আমি তো মাছ নইলে খেতেই পারিনে। সব মাছ মরে গেলে আমরাও না খেয়ে মরে যাব। কিন্তু সূয্যি মামা তো সব মাছ মারতে পারেন না।

চাঁদা মামা বললেন, হাঁ, দাদা সব মাছ মারতে পারেন না, পারলে কি আর বাঙালি কেউ বাঁচতো৷ ছোট ছোট খাল বিল পুকুর শুকিয়ে দিয়ে দাদা যখন সে গুলোর মাছ সব মেরে ফেলেন, তখন দাদার বাড়াবাড়ি দেখে মেঘেরা এসে দাদাকে ঢেকে ফেলে। দাদার আস্পর্দ্ধা একেবারে কমে যায়। এমন কি কখন দুদিন, কখন দশদিন, কখন পনের দিন দাদার আর লোককে মুখ দেখাবার উপায় থাকে না। তাতো হবেই বাবা, বেশী বাড়াবাড়ি করলে তাকে পড়তেই হবে।

অনিল বললে, আচ্ছা মামা, আপনাদের দুই ভাইয়ে কখন দেখা হয় না?

চাঁদা মামা বললেন, ওরে বাবারে, ভাইয়ের সঙ্গে দেখা! ভাই কি আমার সে রকম অনিল, বলেছিতো সর্ব্বদাই বিষম গরম। আমি যদি তাঁর কাছে যাই, তা হলে একেবারে গলে যাব — শুধু গলে যাব না ধোঁয়া হয়ে উড়ে যাব৷-

অনিল বললে, কিন্তু মামা, আপনার দাদা আকাশে থাকতে থাকতেও তো আপনাকে আকাশে উঠতে দেখেছি৷

চাঁদা মামা বললেন, সেটা ঠিক কথা, চাকরির খাতিরে কখন কখন দাদা আকাশে থাকতেও আমাকে উঠতে হয় বটে। কিন্তু সে দাদা যখন আকাশের পশ্চিম দিকের একেবারে শেষে অস্তে যাবার যোগাড় করেন, তখন আমি আকাশের পূব দিকে ভয়ে ভয়ে উঠি। আমায় দেখে দাদা যে রকম চোখ রাঙান, দেখলেও ভয় করে৷

অনিল বললে, আচ্ছা সূয্যি মামা যদি আপনাকে মারতে আসেন?

চাঁদা মামা বললেন, ওঃ সে দিকে আমি খুব সাবধানে থাকি৷ দাদা একটু এগুলেই আমি ছুটে পালিয়ে যাব। অনিল বললে, আপনার তো পা নেই মামা, ছুটবেন কি করে?

চাঁদা মামা বললেন, কেন—গড়িয়ে গড়িয়ে। তোমরা যে মার্বেল খেল, সেই মার্বেল যেমন গড়িয়ে গড়িয়ে ছোটে, আমরা সবাই তেমনি গড়িয়ে গড়িয়ে ছুটি। তোমরা যে পৃথিবীতে বাস কর, সেও গড়িয়ে গড়িয়ে ছোটে। কিন্তু আমরা গড়িয়ে গড়িয়ে ছুটি বলে মনে কর না যে আমরা বেশি ছুটতে পারি না। তোমরা পা দিয়ে যে রকম ছুটতে পার, আমরা গড়িয়ে গড়িয়ে তার চেয়ে অনেক— অনেক বেশি ছুটতে পারি। সে যে কি রকম ছুট, তা এখন বুঝতে পারবে না, বড় হয়ে বই পড়ে বুঝতে পারবে।

অনিল বললে, আচ্ছ। সূয্যি মামার আপনার ওপর এত রাগ কেন মামা?

চাঁদা মামা বললেন, হিংসে – বাবা হিংসে! সব লোকে আমায় ভালবাসে বলে দাদার বড় হিংসে আমার ওপর। লোকে আমায় আদর করে ডাকে, সুন্দর ছেলে হলে চাঁদের মত ছেলে বলে আমার সঙ্গে তুলনা দেয়, আমায় নইলে কবিদের বই লেখা চলে না। কিন্তু দাদাকে কেউ আদর করে না, সবাই দাদার ওপর চটা। সেই জন্যে আমার ওপর দাদার বড় রাগ৷

তার পর চাঁদা মামা চাকরি করতে গেলেন, আর অনিল সেই সব ছেলেমেয়েদের সঙ্গে চাঁদা মামার দেশ দেখে বেড়াতে লাগল। কি সুন্দর দেশ! সে দেশের ছেলে মেয়ে, জন্তু, পাখী, ফুল, ফল, পাহাড়, ঝরণা, নদী সব সুন্দর। সেখানে কুৎসিত কিছুই নেই। অনেকক্ষণ ঘুরে ঘুরে যখন কষ্টবোধ হতে লাগল, তখন অনিল বললে, চল ভাই এইবার ফিরে যাই।

সকলে মিলে ফিরে আসছে, এমন সময় দূরে একটা প্রকাণ্ড মাথার মত কি দেখা গেল। মাথাটা যেন ক্রমে বড় হয়ে অনিলদের দিকে সরে আসছে। সঙ্গের ছেলে মেয়েরা তাই দেখে ভয়ে ছুটে পালাতে লাগল, আর অনিলকে বললে, পালাও—পালাও, রাহু—রাহু। অনিল তাড়াতাড়ি ছুটতে গিয়ে পায়ে পা বেধে পড়ে গেল, সঙ্গে সঙ্গে ভয়ে চীৎকার করে কেঁদে উঠল।

অনিলের চীৎকার শুনে তার মা এসে দেখেন, যে অনিল বিছানায় বসে দুই হাতে দুই চোখ রগড়াচ্ছে, আর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কি হয়েছে বাবা? অনিল কাঁদতে কাঁদতে বললে, চাঁদা মামাকে রাহু খেতে আসছে। মা বুঝতে পারলেন, যে অনিল স্বপ্ন দেখে ভয় পেয়েছে। তিনি অনিলকে কোলে নিয়ে বললেন, আমি রাহুকে তাড়িয়ে দিয়েছি, তুমি ঘুমোও। তখন অনিল যেখানে থাকলে শিশুর কোন ভয় থাকে না, সেই মায়ের কোলে ঘুমিয়ে পড়ল।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ