প্রতি রোববার সকালে ডাকুর বাবা বাজার থেকে অনেক ফল নিয়ে আসেন ৷ আমের সময় আম, লিচুর সময় লিচু, কমলালেবুর সময় কমলালেবু ৷ কলার বোধ হয় কোনো সময় নেই, ধরতে গেলে সারা বছরই ওদের বাড়িতে কলা আসে, পাকা কলা । রোজ দেখা যায়, সেই ফল খেতে একটুও মজা লাগে না । দেখলে তাই ডাকুর মুখ বেঁকে যায়, কিন্তু অন্য ফল দেখলেই ও খুব খুশি। ভাঁড়ার ঘরে আলমারির নিচের তাকে ফলগুলো সাজিয়ে রাখেন ঠাকুমা ৷ তারপর নিজে হাতে করে সবাইকে দেন । প্রথম তিন- চারদিন ঠাকুমা একটাও ফল খান না। তারপর খান, খাওয়ার আগে ফলটা টিপে-টিপে পরীক্ষা করেন, চোখের সামনে তুলে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখেন।
একদিন একটা আম হাতে নিয়ে ঠাকুমাকে ওইরকম করতে দেখে ডাকু জিজ্ঞেস করল, “কী দেখছ ঠাকুমা ?”
ঠাকুমা বললেন, “দেখছি আমটায় দাগ ধরছে কি না ।”
“দাগ ধরলে কী হয় ?”
“ফল নষ্ট হয়ে যায়।”
“নষ্ট ফল দিয়ে কী করবে ?”
“পচা জায়গাটা কেটেকুটে বাদ দিয়ে খাব।”
“আমিও পচা ফল খাব,” বায়না ধরল ডাকু ।
ঠাকুমা মুচকি হেসে আলমারি থেকে আর-একটা আম বার করে ডাকুর হাতে দিয়ে বললেন, “তুমি এই আমটা খাও।”
ডাকু আমটা হাতে নিয়ে দেখল, আমের গায়ে একটুও দাগ ধরেনি। দাগ দেখতে না পেয়ে ওর মন খারাপ হয়ে গেল। ও বলল, “এ আমটা খাব না, এর গায়ে একটুও দাগ ধরেনি।”
ঠাকুমা হেসে উঠে বললেন, “দাগ-ধরা আম খেতে নেই।”
“তুমি খাচ্ছ কেন?”
“আমি তো ঠাকুমা।”
ঠাকুমার যুক্তি শুনে ডাকু ভাবল, ঠাকুমারা বোধহয় শুধুই দাগ-ধরা আম খায়। ডাকু আর তর্ক না করে হাতের আমটা খেল তারিয়ে তারিয়ে। খাওয়া হয়ে গেলে ঠাকুমা ওর হাত ধুয়ে দিলেন, মুখ মুছে দিলেন। ডাকু ঠাকুমাকে খুব ভালবাসে, আম খাওয়ার পরে ঠাকুমার ওপর ওর ভালবাসা আরও বেড়ে গেল ।
ডাকু প্রতিদিন আলমারির নীচের তাকের ফলগুলো উলটিয়ে-পালটিয়ে দেখে । কোনো ফলে সামান্য একটু দাগ ধরলেই হৈ-হৈ করে চ্যাঁচাতে থাকে, “ঠাকুমা, ফল পচেছে খাবে এসো।”
ঠাকুমা প্রায় ছুটে এসে চাপা গলায় ধমক দিয়ে বলেন, “তুই চুপ কর তো, লোকে শুনলে বলবে কী ?”
ওকে এভাবে চুপ করতে বলার মানে বুঝতে পারে না ডাকু। অবাক হয়ে বলে, “চুপ করব কেন ঠাকুমা ? তুমি তো পচা ফল ছাড়া অন্য ফল খাও না।”
ঠাকুমা প্রসঙ্গটা চাপা দেওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি বলেন, “কই, দে তোর পচা ফল ।"
ঠাকুমা দাগ ধরা জায়গাগুলো কেটে বাদ দিয়ে ফল খান | ওঁকে ফল খেতে দেখে ডাকুর খুব আনন্দ হয় । বেচারা ঠাকুমার তো সবসময় ফল খাওয়া হয় না। সেই কবে দাগ ধরবে ফলে তার জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হয়। অথচ অন্য সবাই দাগ-না-ধরা ফল খায় কত মজা করে ।
অন্য সকলের মতো ভাল ফল খাওয়ার জন্যে ডাকু কত বুঝিয়েছে ঠাকুমাকে, কিন্তু ঠাকুমা কথার কোনো উত্তর না দিয়ে মিটিমিটি হেসেছেন শুধু। ডাকু কদ্দিন ওর নিজের ভাগের আম, কমলালেবু আর আপেল দিয়েছে ঠাকুমাকে। ঠাকুমা একদিনও খাননি। বেশি জোর করলে ধমক দিয়ে বলেছেন, “তোকে আর পাকামো করতে হবে না তো।”
কী আর করবে ডাকু, মুখ চুন করে সরে গেছে ঠাকুমার সামনে থেকে। কিন্তু বেশিক্ষণ আড়ালে আড়ালে থাকতে পারেনি, গল্প শোনার লোভে একটু পরেই আবার ঘুরঘুর করেছে ঠাকুমার পায়ে পায়ে ।
রোজ আলমারির নীচের তাকগুলো ডাকুর একবার দেখা চাই-ই চাই। শুধু বাইরে থেকে দেখা নয়, প্রত্যেকটা ফল হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখে ও । কোনো ফলে দাগ না ধরলে ওর মন খারাপ হয়ে যায়, আর দাগ ধরলে ওর চিৎকারে কান ঝালাপালা হয়ে যায় সকলের। “ঠাকুমা, ফল পচেছে খাবে এসো। ফল পচেছে, খাবে এসো।”
তাই না শুনে ঠাকুমা অন্যান্য দিনের মতো ছুটে এসে চাপা গলায় ওকে ধমকে বলেন, “তুই চুপ কর তো, লোকে শুনলে বলবে কী ?”
কিন্তু ডাকু চট করে থামার ছেলে নয়। ওকে তখন থামাবার জন্যে ঠাকুমা তাড়াতাড়ি পচা জায়গাগুলো কেটে বাদ দিয়ে ফলটা খেয়ে ফেলেন।
এইভাবে চলতে লাগল দিনের পর দিন। ডাকু চিৎকার করে ডাকলেই ঠাকুমা “যাচ্ছি, যাচ্ছি” বলতে বলতে লম্বা পায়ে চলে আসেন। ঠাকুমা জানেন, যেতে একটু দেরি করলেই ডাকু মুখস্থ পড়ার মতো চ্যাঁচাতে থাকবে, “ঠাকুমা, ফল পচেছে খাবে এসো। ফল পচেছে, খাবে এসো ।”
এইসব বলার জন্যে কেন ঠাকুমা ওকে বকুনি দেন, ডাকু কিছুতেই বুঝতে পারে না। ঠাকুমা তো নিজেই ওকে বলেছেন দাগ-ধরা-ফল ঠাকুমারা খেয়ে থাকে। দাগ ধরা ফল মানে পচা ফল । পচা ফল মানে ঠাকুমার খাওয়ার ফল । এতে অত লজ্জা পাওয়ার কী আছে ? বকুনিই বা কেন ? ঠাকুমা যখন চিৎকার করে সবাইকে ডেকে ডেকে বলেন, “ভাত দেওয়া হয়েছে, খেয়ে যা” তখনও তো পাড়ার লোকে ঠাকুমার কথা শুনতে পায়। কিন্তু বাড়ির কেউই তো ঠাকুমার ওপর চটে যায় না। অথচ যত দোষ সব ডাকুর বেলায়। পচা ফল খাওয়ার জন্যে চেঁচিয়ে ডাকলেই ঠাকুমা হিসহিস করে বলবেন, “তুই চুপ কর তো, লোকে শুনলে বলবে কী ?”
চাপা ধমক শুনে ঠাকুমার ওপর মাঝেমধ্যে অভিমান হয় ডাকুর, কিন্তু সে অভিমান বেশিক্ষণ থাকে না। ডাকু খুব ভালবাসে তো ঠাকুমাকে, তাই দাগ-ধরা জায়গাগুলো কেটে বাদ দিয়ে ঠাকুমা যখন ফল খান, তখন আবার ওর মন ভাল হয়ে যায়। খাওয়ার পরে ঠাকুমা দারুণ দারুণ সব গল্প শোনান ওকে।
শীতটা যখন বেশ চেপে বসেছে তখন ডাকুর পরীক্ষার ফল বার হল। ডাকু সেকেণ্ড হয়েছে, একটুর জন্যে ফাস্ট হতে পারেনি । ফার্স্ট না হতে পারার জন্যে প্রথমদিকে ওর খুব একটা দুঃখ ছিল না, কিন্তু বাড়ির সবাই যখন একসঙ্গে ইশ ইশ করতে লাগল, তখন ওর দুঃখটা বেড়ে গেল অনেকখানি। সেই দুঃখ কমাবার জন্যে মেজ-কাকু ওকে খুব সুন্দর দেখতে একটা পিস্তল কিনে দিলেন। রাত্তির- বেলা ঘরের আলো নিবিয়ে ট্রিগার টানলে রঙিন আলো বার হয় পিস্তলের নল থেকে। সেই আলো দেখে ডাকুর সেকেণ্ড হওয়ার দুঃখ মিলিয়ে গেল এক্কেবারে ।
দিনকয়েক বাদে ডাকুর বাবা অফিস থেকে বাড়ি ফিরে বললেন, “ডাকু, এই দেখ তোমার জন্যে কী এনেছি।”
বাবার হাতে বেশ বড় একটা কাগজের প্যাকেট। ডাকু জিজ্ঞেস করল, “কী আছে ওতে?”
বাবা কোনো উত্তর না দিয়ে একটু হাসলেন । কাগজের প্যাকেটটা খুলতেই ভেতর থেকে বেরিয়ে এল অনেকগুলো নতুন মলাটের বই, আর কী সুন্দর দেখতে একটা প্লাস্টিকের বাক্স। বাবা হাসতে-হাসতে বললেন, "সব বই তোমার। তুমি নতুন ক্লাসে উঠেছ তো, এবার নতুন-নতুন বই পড়তে হবে।”
নতুন বইগুলো থেকে কেমন যেন একটা মিষ্টি গন্ধ উঠছিল, আর বইয়ের মলাটের ছবিগুলো কী সুন্দর দেখতে। শম্পাদি একদিন ডাকুকে বলেছিল, “বড়রা অনেক বই পড়ে। তুমি যখন অনেক বই পড়বে, তখন তুমি সত্যি-সত্যি বড় হবে।”
কথাটা হঠাৎ মনে পড়ে গেল ডাকুর । ওর এত পড়ার বই, তার মানে ও সত্যিই বড় হয়ে গেছে। নিজেকে বড় ভাবতেই গা শিরশির করে উঠল ডাকুর। কিন্তু ওই প্লাস্টিকের বাক্সটা কিসের ?
বাবা বললেন, “ওটা জলরঙের বাক্স। এই তুলিটা জলে ভিজিয়ে রঙের উপর ঘষে নিয়ে ছবি রঙ করবে।”
অ্যাদ্দিন ছবি রঙ করত ডাকু রঙ-পেনসিলে। এবার রঙ- পেনসিলের বদলে জলরঙ। ডাকু ভেবে নিল, এটাও নিশ্চয়ই বড় হওয়ার লক্ষণ।
নতুন ক্লাসে উঠে নতুন-নতুন বই পড়তে লাগল ডাকু। সচিত্র বিজ্ঞান আর স্বাস্থ্যের বই পড়তে ওর খুব মজা লাগে। স্কুলে যদ্দুর পড়া হয়েছে, তার অনেক বেশি পড়া হয়ে গেছে ওর ।
একদিন স্বাস্থ্যের বই পড়তে পড়তে ডাকু পড়ল, “পচা ফল খাইতে নাই, পচা ফল খাইলে অসুখ হয় । ফলে দাগ ধরিলে বুঝিতে হইবে যে, ফল নষ্ট হইয়াছে, অর্থাৎ পচিয়াছে।”
পড়ে ভীষণ মন খারাপ হয়ে গেল ডাকুর । ঠাকুমা তো শুধুই দাগ ধরা ফল খান। দাগ-ধরাফস মানে পচা ফল। পচা ফল খেলে অসুখ হয়। পচা ফল খেয়ে খেয়ে নিশ্চয়ই অসুখ হয়েছে ঠাকুমার । কিন্তু অসুখ হলে তো সবাই বিছানায় শুয়ে উঃ আঃ করে, ওষুধ খায় । ঠাকুমা তো বিছানায় শুয়ে উঃ আঃ করেন না, ওষুধ খান না । কেমন যেন ধাঁধায় পড়ে গেল ডাকু। তারপর ভাবল, বইতে কখনোই মিথ্যে কথা লেখে না। ঠাকুমার নিশ্চয়ই জ্বর হয়। ও যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখনই হয়ত জ্বর আসে ঠাকুমার ।
বইটা হাতে নিয়ে ডাকু ছুটে ঠাকুমার কাছে গিয়ে অভিমানের গলায় বলল, “ঠাকুমা, তোমার জ্বর হয় আমাকে বলো না তো ?” ঠাকুমা অবাক হয়ে বললেন, “সে কী! আমার জ্বর হবে কেন! কে বলল আমার জ্বর হয় ?”
“হ্যাঁ হয়, আমি জানি । আমি যখন ঘুমিয়ে পড়ি, তখন তোমার জ্বর আসে।”
ঠাকুমা হেসে ওঠে বললেন, “তুই কি স্বপ্ন দেখেছিস ?”
ঠাকুমার কথায় একটু চটে গিয়ে ডাকু বলল, “আমি জানি তোমার অসুখ করেছে, বইতে লিখেছে।”
“বইতে লিখেছে!”
ডাকু বইটা ঠাকুমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, “এই দেখ আমাদের বইতে কী লিখেছে।”
ঠাকুমা বইয়ের দিকে ঝুঁকে পড়ে বললেন, “ওহো, আমি তো আবার চশমা ছাড়া দেখতে পাই না, কী লিখেছে বইতে ?”
ডাকু বলল, “বইতে লিখেছে, পচা ফল খেলে অসুখ হয়। তুমি পচা ফল খাও, তোমার ঠিক অসুখ হয়েছে।”
শুনে ঠাকুমা হেসে উঠে বললেন, “ও, এই কথা । তা বইতে কি একবারও লিখেছে, পচা ফল খেলে ঠাকুমাদের অসুখ করে?”
প্রশ্ন শুনে ডাকু কেমন যেন থতমত খেয়ে গেল। তারপর বলল, “পচা ফল খেলে সবারই অসুখ করে। আমরা কেউই পচা ফল খাই না, তুমি খাবে কেন ? তুমি আর কক্ষনো খাবে না তো ?” ঠাকুমা এবার মিটিমিটি হেসে বললেন, “তোর পড়াশুনো হয়ে গেছে ? হয়ে গেলে খেলগে যা। বকবক করিস না।”
বইয়ের কথাকে একেবারে পাত্তা না দেওয়ার জন্যে ঠাকুমার ওপর অভিমান হল ডাকুর । ও আর কিচ্ছু না বলে চলে গেল।
ঠাকুমার ওপর বেশিদিন অভিমান করে থাকতে পারল না ডাকু । পচা ফল খেয়ে নির্ঘাত অসুখ করেছে ঠাকুমার । আরও খেলে অসুখ আরও বেড়ে যাবে। ডাকু কত বুঝিয়েছে ঠাকুমাকে, কিন্তু ঠাকুমা কিছুতেই বুঝতে চান না। সব শোনার পরে শুধু মিটিমিটি হাসেন ।
হঠাৎ একদিন এক বুদ্ধি খেলে গেল ডাকুর মাথায় । ছুটির দিন দুপুরে খেয়েদেয়ে সবাই শুয়ে পড়লে বুদ্ধিটা কাজে লাগাল ডাকু । তারপর বিকেলবেলায় ভাঁড়ার ঘরে গিয়ে ও চ্যাঁচাতে লাগল, “ঠাকুমা, কমলালেবু পচেছে, শিগ্গির খাবে এসো।”
আজ কয়েকটা দিন বেশ নিশ্চিন্তে কেটেছিল ঠাকুমার । হঠাৎ ডাকুর চিৎকার শুনে চমকে উঠলেন, তারপর পড়িমরি করে রান্না-ঘরে গিয়ে বললেন, “তুই চুপ কর তো, লোকে শুনলে বলবে কী!”
ডাকু গলার স্বর একটুও না নামিয়ে বলল, “চুপ করব কেন, লোকে শুনলে হবেটা কী ? তুমি পচা ফল খাও তাতে দোষ নেই, আর লোককে শোনালেই দোষ। তুমি শিগ্গির এই পচা কমলালেবুটা খেয়ে নাও, না হলে আমি আবার চ্যাঁচাব।”
তাই না শুনে ঠাকুমা ওকে থামাবার জন্যে বললেন, “দে তোর কমলালেবু।”
ডাকু কমলালেবুটা ঠাকুমার হাতে দিল। ঠাকুমা দাগ-ধরা কমলালেবুটা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখে নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে মুখে ফেললেন একটা কোয়া । ডাকু অবাক হয়ে দেখল, ঠাকুমার রাগি মুখটা দেখতে দেখতে কী খুশি-খুশি হয়ে উঠেছে। পুরো কমলালেবুটা ঠাকুমা খেয়ে ফেললেন চটপট।
এখন আবার আগের মতোই পচা ফল খাওয়ার জন্যে ডাকু ঠাকুমাকে প্রায়ই ডাকে। ঠাকুমাও ছুটে আসেন তড়িঘড়ি করে। এসে মিষ্টি করে ধমক দেন তারপর পচা ফল খান মনের আনন্দে । এত ভাল পচা ফল ঠাকুমা আগে কখনো খাননি ।
কেন জানো ? আসলে ফলগুলো পচাই নয় ।
ডাকু লুকিয়ে লুকিয়ে ভাঁড়ার ঘরে গিয়ে রঙ আর তুলি দিয়ে টাটকা ফলে পচা ফলের মধ্যে দাগ ধরিয়ে দেয়। আর সত্যিকারের পচা ফলগুলো ছুঁড়ে ফেলে দেয় জানলা দিয়ে।
0 মন্তব্যসমূহ