Ticker

20/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

অগ্নিপরীক্ষায় বিশ্বরঞ্জন । অরিন্দম বসু



আজ ক্লাস সেভেনের অংক পরীক্ষা। বিশ্বরঞ্জনের কাছে অগ্নিপরীক্ষা বলা চলে। এমনিতে সব সাবজেক্টেই কম-বেশি ছ্যাঁকা খায় সে। একে তো পড়তে ভালো লাগে না। বেশিক্ষণ বই নিয়ে বসে থাকলে অক্ষরগুলো গরম হয়ে ফুটতে থাকে। তারপর পাতা ছেড়ে হালকা হয়ে ওপর দিকে উঠে যায়। তখন যা পড়ে থাকে তাকে বলে শূন্যস্থান। বিশ্বরঞ্জন জানে সেটাই হল তার মাথার ভেতরের আসল অবস্থা। আর অঙ্ক হল যাকে বলে আগুন। তাতে একবার সেঁধিয়ে গেলেই রক্ষে নেই।

বিশ্বরঞ্জন খাতার দিকে তাকাল। নাম, রোল নম্বরটা লিখেছে। তাছাড়া বাকিটা একেবারে সাদা, পরিষ্কার। কোশ্চেন পেপারটাও দেখল। এক একটি জ্বলন্ত কয়লা অপেক্ষা করছে সেখানে। নাঃ, মিছিমিছি হাত পুড়িয়ে লাভ নেই। পরীক্ষা যখন তার তখন সাদা খাতা জমা দেওয়ার স্বাধীনতা নিশ্চয়ই আছে।

মুখ তুলে গোটা ক্লাসঘরটায় চোখ ঘুরিয়ে নিল বিশ্বরঞ্জন। ফ্যান চলছে। শুধু তারই শোঁ শোঁ শব্দ ঘরে। বেশ গরম। কিন্তু যারা পরীক্ষা দেবে বলে এসেছে তাদের কী ঠাণ্ডা কী গরম। অ্যানুয়াল বলে কথা। সকলের মাথা ঝুঁকে পড়েছে। বিশেষ করে সামনের বেঞ্চের দিকে। ওদিকেই তো ভালো ছেলেরা থাকে। ফার্স্ট বয় অনিন্দ্য, সেকেন্ড কৌস্তভ, থার্ড রাজর্ষি- সবাই মন দিয়ে লিখে চলেছে। আরও অনেকেই তাই। একসময়ে ঘন্টা পড়বে। পরীক্ষা শেষ হবে। খাতা জমা পড়বে। শুধু সে একা ভেবে চলেছে। এতখানি সময় কীভাবে কাটাবে।

-কী বিশ্ব ? এদিক ওদিক কি দেখছো বাবা? দেওয়ালে তো অংকের উত্তর লেখা নেই। ওটা তোমাকেই লিখতে হবে খাতায়, আর সেটা রয়েছে তোমার সামনে। দাগ টেনেছ সেখানে? শুরু করো এবার।

অংকের স্যার দেবব্রত মাইতি নিজে গার্ড দিচ্ছেন। এখনও অব্দি চেয়ারে বসে। সেখান থেকেই কথাগুলো ছুড়ে দিলেন বিশ্বরঞ্জনের দিকে।

বিশ্বরঞ্জন চোখ নামিয়ে নিল। স্যার তো জানেন তাকে। সে হল লাস্ট বেঞ্চের ছেলে। খেলতে বল- আছে, দৌড়তে বল- আছে, মারপিট করতে বল- আছে। লেখাপড়ায় কোনোমতে টিকে আছে। সেভেনের হাফ ইয়ার্লিতে পেয়েছিল পনেরো। এই অ্যানুয়ালে বিশ্বরঞ্জনের খুব আশা যে, স্যার আর অত নম্বর দিতে পারবেন না। অঙ্কে সে নিজেকেও হতাশ করবে না।

এই অংকের জন্য তাকে কোচিং-এ ভর্তি হতে হয়েছে। বিশ্বরঞ্জনের বাবা অসীম রায় দারোগা। থানায় যেমন আসামীদের সঙ্গে টক্কর দিতে হয়, তেমনি বাড়িতে ছেলের সঙ্গে। মাঝে মাঝেই বিশ্বরঞ্জন তার গালে, পিঠে, হাঁটুতে তা টের পায়। হাফইয়ার্লির রেজাল্ট জানার পর বাবা তাকে বললেন, না, তোকে আর মারব না। মেরে কিচ্ছু হবে না। তুই ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে থাক একদিন।

দাঁড়িয়ে থাকাটা বিশ্বরঞ্জনের কাছে কোনো ব্যাপারই নয়। স্কুল তাকে কবেই সে অভ্যেস করিয়ে ছেড়েছে। কথাটা শুনেই সে দরজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। অসীম রায় বললেন, জামাটা খুলে রেখে যা।

অবাক হয়ে তাকিয়েছিল বিশ্বরঞ্জন। বাবা আবার বললেন, আমি কাজে চলে গেলে তুই বাইরে থেকেই কোথাও চলে যাবি জানি। কোনো বন্ধুর বাড়ি গিয়ে বসে রইলি হয়তো। নয়তো আর কী কী করবি কে বলতে পারে। খালি গায়ে তো কোথাও চলে যেতে পারবি না। দাঁড়িয়েই থাকতেই হবে। লোকে তোকে ওভাবে দেখে জানতে চাইবে কী হয়েছে। তুই বলবি। জামাটা তাই থাক।

কিছুদিন আগে চুল কাটা হয়েছে। সেই খোঁচাখোঁচা চুলে হাত বুলোতে খুব আরাম লাগে বিশ্বরঞ্জনের। মাথাটাকে মাথা বলে মনেই হয় না। যেন মাঠে ঘাস গজিয়েছে। তফাৎ হল এগুলো নরম নয়। সে চুলে হাত রেখে বলল, রাখতে পারো, তবে চাইলে আমি খালি গায়েও চলে যেতে পারি।

এবার অসীম রায় অবাক হলেন। পারিস! ওভাবে কোথায় যাবি?

সে এখন বলব না।

লোকে যখন জানতে চাইবে তখন কী বলবি?

বলব বাবা আমাকে এইভাবে বের করে দিয়েছে। যদি কেউ জানতে চায়, কে তোমার বাবা? তোমার নাম বলব। তোমাকে তো এখানে সকলেই চেনে।

অসীম রায় চমকে সোজা হয়ে বসলেন। এটাতো তিনি ভাবেননি। তার ছেলে বাড়ির সামনে খালি গায়ে দাঁড়িয়ে আছে কিংবা হেঁটে হেঁটে কোথাও রওনা দিয়েছে- তাতে তো তিনিও জড়িয়ে যাচ্ছেন তাহলে। যতটা পারা যায় গম্ভীর গলায় তাই বললেন, ঠিক আছে, জামা ছাড়তে হবে না। তুই ভেতরে যা। আমি অন্য ব্যবস্থা দেখছি।

সেই অন্য ব্যবস্থাই হল দীপঙ্কর স্যারের কোচিং। সপ্তাহে দুদিন পাক্কা দু'ঘণ্টা হাঁটু ভাঁজ করে বসে থাকো। যাদের মাথায় কিছুতেই অঙ্ক ঠোকা খেয়েছে। তবে তাতে এখনও অঙ্ক ঢোকেনি। মাথার বিভিন্ন জায়গায় ফুলে গেছে।

কোশ্চেন পেপারটা টেনে খাতার ওপর নিয়ে এল সে। একবার পড়ে দেখবে নাকি কী কী আছে ? মাথা আরোও গুলিয়ে যেতে পারে যদিও। দু-একটা চেনা অঙ্ক যাও বা থাকতে পারে তাও হয়তো ফস্কে যাবে।

ফস করে কুঞ্জমামার কথা মনে পড়ে গেল বিশ্বরঞ্জনের। মায়ের পিসতুতো দাদা। সারা দুনিয়া চষে বেড়ান। ঘোরাটাই তার নেশা। যখন যেখানে থাকেন সেখানে কাজ করে কিছু টাকা পয়সা জমিয়ে নেন। তারপর আবার বেরিয়ে পড়েন। দেশে যখন ফেরেন তখন তাদের বাড়িতে আসেন। কিন্তু তা যে কবে ঘটবে তার কোনো আগাম খবর থাকে না। এসে নানারকমের গল্প বলেন। খুব ভালো লাগে বিশ্বরঞ্জনের। তিনিই একবার বলেছিলেন, ফিনিক্স পাখির কথা। সেবার গিয়েছিলেন মিশরে। মিশরের উপকথায় নাকি ওই পাখির কথা আছে। পাঁচশো বছর বাঁচে। একেবারে একটার বেশি ফিনিক্স পাখি থাকে না। তার যখন মরে যাওয়ার সময় হয়, তখন সে নিজেই আগুন জ্বালিয়ে তাতে ঝাঁপ দেয়। তারপর সেই আগুন থেকে জন্ম নেয় আর একটা ফিনিক্স পাখি। এসব কথা বিশ্বরঞ্জন ভোলে না।

মনে হয়- আহা সে যদি ঐরকম হতে পারত। অঙ্কের আগুনে ঝাঁপ দিয়ে যখন ফিরে বেরিয়ে আসতো তখন তার মগজে গিজগিজ করছে সব ফর্মুলা। বীজগণিত, পাটিগণিত জল হয়ে গেছে, হাত ঘোরালেই জ্যামিতি শেষ। বাবা বলছেন, তুই অঙ্কে একশোয় একশো! বিশ্বাসই হচ্ছে না। দীপঙ্কর স্যার বলছেন, তোকে শেখাবার আর কিছু নেই। বাড়ি যা। আর অঙ্কের স্যার দেবব্রতবাবু বলেছেন, এতদিন তোকে ভুল বুঝেছি রে বিশ্ব। কিছু মনে করিস না।

দেবব্রত মাইতি বললেনও। তবে অন্য কথা। বিশ্বরঞ্জনের মাথায় আলতো চাঁটি পড়তেই চটকা ভাঙল। স্যার বললেন, গালে হাত দিয়ে ভাবলে কি অঙ্কগুলো পাখির মতো উড়ে তোর খাতা এসে বসবে? একটাও তো ধরিসনি দেখছি এখনও পর্যন্ত। একটা- দুটো চেষ্টা কর অন্তত।

বিশ্বরঞ্জন বড়ো বড়ো চোখ তুলে স্যারের দিকে তাকাল। সে চোখের সাদা জায়গায় কয়েকটা হলুদের ছিটে। বলল, কী হবে স্যার চেষ্টা করে। শুধু শুধু কতগুলো ভুল অঙ্ক করব। আপনি খাতা দেখতে গিয়ে বিরক্ত হবেন।

ও তাই বুঝি। আমার কথা তোকে ভাবতে হবে না। সে আমি বুঝে নেব। তুই চেষ্টা তো কর। জানব সেটুকু করেছিস না হয়। পাশ নম্বরটা যদি তুলতে পারিস তাহলেও তো হয়। দ্যাখ কদ্দুর পারিস।

স্যারের সঙ্গে বিশ্বরঞ্জনের এইসব কথাবার্তা সকলেই শুনতে পাচ্ছিল। কেউ কেউ ঘাড় ঘুরিয়ে দেখছিল। কারও মুখে চাপা হাসি। তারপর তারা আবার ফিরে যাচ্ছিল খাতায়।

বলতে বলতে দেবব্রত মাইতি চলে যাচ্ছিলেন। কয়েকটা কঠিন অঙ্ক দিয়েছেন তাদের জন্য যাদের বুদ্ধির জোর বেশি। কয়েকটা কমনও রেখেছেন যাতে অন্য ছেলেদেরও নম্বর ওঠে। ক্লাসে তো সবরকমই থাকে।

বিশ্বরঞ্জন স্কুলের স্যারদের ঠিক বুঝে উঠতে পারে না।সব ক্লাসেই বকাঝকা খায়, পড়া পারে না বলে। মারও বাকি নেই। আবার খেলাধুলায় প্রাইজ পেলে স্যারেরা পিঠ চাপড়ে দেন। সে ভালো গল্প বলতে পারে বলে স্কুলে রটিয়ে দিয়েছেন  অঙ্কের স্যারই। স্কুলে না এসে উপায় নেই। বাবা আস্ত রাখবেন না। আর স্কুলে এসে সে আধখানা হয়ে যাচ্ছে।

দেবব্রতবাবু ক্লাসময় ঘুরপাক খাচ্ছেন। আবার হয়তো তার দিকেই আসবেন। বিশ্বরঞ্জন ভাবল কোশ্চেন পেপারটা একবার ঘেঁটে দেখবে। যা থাকে কপালে। কি হবে যখন জানা্ই আছে তখন ভয়টা কীসের!

বাইরে তাকাল সে। বীরেন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশনের বাড়িটা পুরনো। কড়ি-বরগাগুলো আনেক উঁচুতে। জানলাগুলো লম্বা লম্বা। শিক লাগানো। যতটুকু আকাশ দেখা যাচ্ছে সেখানে মেঘের রং সাদা থেকে বদলে ছাই হয়ে গিয়েছে। খুব ভ্যাপসা দিন আজ। বৃষ্টি নামবে কি?

প্রায় এক ঘন্টা ধরে নানারকম অঙ্কের সঙ্গে কসরত করার পর বিশ্বরঞ্জন বুঝল যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। যথাসাধ্য করেছে সে। মোট সাড়ে আটখানা পাতায় শোভা পাচ্ছে। স্যার যা বলেছিলেন সে কথাটা রাখা গেল। এর বেশি করতে গেলে এরপর এক থেকে একশোও মনে থাকবে না আর।

ঠিক এই সময়ে কে যেন ফিসফিস করে বলল, উঠিস না, খাতা জমা দিয়ে দিস না এখনই।

পাশে তাকাল বিশ্বরঞ্জন। সন্দীপ বসে বসে পেনের শেষ দিকটা কামড়াচ্ছে। সুতরাং সে কিছু বলেনি। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল। পিছনে শুভ আর অপূর্ব পাশাপাশি। ওদেরই কেউ বলেছে। তখনই দেখতে পেল শুভর ঠোঁট নড়ছে। এদিকে দেখিস না। সামনে তাকা। স্যার গিয়ে বসেছেন। এবার হয়ে যাবে।

বিশ্বরঞ্জন সোজা তাকাল। দেবব্রত মাইতি আনমনা ভঙ্গিতে চেয়ারে বসে। উনি ওরকম বসেন, সবাই জানে। ক্লাসে অংক করতে দিয়ে মাঝে মাঝে একেবারে হারিয়ে যান। দেবব্রতবাবু নাকি ওই সময়টায় কঠিন কঠিন অঙ্ক নিয়ে খেলা করেন মনে মনে। মুখে একটা হাসি ভেসে থাকে। তখন ভালো ছেলেরা চেঁচিয়ে বলে, স্যার, হয়ে গেছে। খাতা দেখবেন না? কিন্তু আজ তো সেরকম কিছু কেউ বলবে না এখনই। অথচ শুভ বলল, এবার হয়ে যাবে, কি হবে?

এই নে, ধর, পিছনে হাতটা বাড়িয়ে দে। সেই ফিসফিসিয়ে গলা।

আবার মুখ ফেরাতে হল বিশ্বরঞ্জনকে। কি হয়েছে? কি ধরব?

তিনটে অঙ্ক। জামার নিচে নিয়ে এসেছিলাম। কমন পড়ে গেছে। আমার শেষ, অপূর্বরও। তুই নিয়ে নে। তিন সাত্তে একুশ।

ক্লাসে যারা পেছনের বেঞ্চে বসে তাদের একটা দল আছে। ভালো ছেলেরা কোনো দল গড়তে পারে না। খারাপ ছেলেরা খুব তাড়াতাড়ি পারে। পড়াশোনায় খারাপ বলে বিশ্বরঞ্জন নিজেকে তাদের মধ্যেই ধরে। শুভ, অপূর্ব, কুশ, সন্দীপ আরও কয়েকজন। তাদের মধ্যে শুভ এই কাণ্ডটা ঘটিয়েছে। আরও কেউ আছে কিনা তা জানে না বিশ্বরঞ্জন।

কী হল? ধর তাড়াতাড়ি। স্যার দেখতে পাবেন না এখন।

স্যার সেইরকম ভাবেই বসে রয়েছেন। মনে হচ্ছে যেন তাদের দিকেই তাকিয়ে, আসলে তা নয়। বিশ্বরঞ্জন আবারও জানলার বাইরে দেখল। মেঘ জমে জমে অন্ধকার হয়ে আসছে স্যারের সে খেয়াল নেই।

বিশ্বরঞ্জন খাতায় চোখ বোলালো। শুভর কাছ থেকে তিনটি অঙ্ক এলে একুশ। যা করেছে তার সঙ্গে একুশ জুড়লে যদি পাশ করে যায়! সাংঘাতিক ব্যাপার! কিন্তু মা! বাড়িতে গেলেই মা জানতে চাইবে, কিরে কেমন হল পরীক্ষা? সবসময়ই জানতে চায়। বিশ্বরঞ্জন স্পষ্ট বলে দেয়- ভালো না। মা বলে রেখেছে- তবুও ভালো। যদি ভালো দিস নিজের চেষ্টায় দিবি। নিজে যা পারিস লিখবি। অন্য কিছু করিস না কিন্তু।

কী রে বিশ্ব? দেরি করছিস কেন?

সে সামনে চোখ রেখেই মাথা ঝাঁকাল। তারপর ফিরে দেখল, শুভ হাঁ তার মুখের দিকে দেখছে। নিবি না তুই এগুলো?

বিশ্বরঞ্জন এক মুহূর্ত অপেক্ষা করল। পাশ-ফেল যাই করুক, গর্বের সঙ্গে করবে। সে বলল, না। বিশ্বরঞ্জন রায় ফেল করে কিন্তু টুকে পরীক্ষা দেয় না। বলেই সে খাতা, পেন, বোর্ড, জ্যামিতি বাক্স নিয়ে উঠে দাঁড়াল। এবার গলা তুলে বলল, স্যার আমার হয়ে গেছে, খাতা জমা দেব?

অঙ্ক স্যারের ধ্যান ভেঙে গেছে। টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই তিনি বললেন, এরমধ্যে হয়ে গেল তোর! এখনো কিন্তু অনেক সময় বাকি, আর একটু দেখলে হত না?

হত না স্যার। মাথা নাড়ল বিশ্বরঞ্জন। এরপর হলে আমি টুকতাম। সেটা কি ভালো স্যার?

চশমার ভেতর দিয়ে গভীর চোখে বিশ্বরঞ্জনের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন দেবব্রত মাইতি। তারপর বললেন, দে, খাতা দে।

ঝমঝম করে বৃষ্টি নামল। স্কুলের ভেতরে যে ছোট মাঠটা রয়েছে, সেখানে ঘাস ভিজে যেতে লাগল। মাঝখানের ন্যাড়া জায়গাটা কাদা হয়ে যাবে একটু পরে। ক্লাস রুমের ভেতরটা আলো কমে এসেছে। বিশ্বরঞ্জন বেরিয়ে যাচ্ছিল। স্যার বললেন, এতখানি যে সময় বেঁচে গেল তোর, কি করবি এখন?

বিশ্বরঞ্জন বলল, ভিজব স্যার। বৃষ্টিতে ভিজতে খুব মজা হয়। ক্লাসের আলোটা জ্বালিয়ে দিয়ে যাব স্যার? ওরা না হলে দেখতে পাচ্ছে না। ওদের তো এখনো শেষ হয়নি। অঙ্কের স্যার বললেন, যা, জ্বেলে দিয়ে যা।

 

অলংকরণ- শঙ্কর বসাক

প্রকাশিত- চিরকালের ছেলেবেলা ।। শারদীয়া ১৪২০

 

Topic :সামাজিক গল্প, সততার গল্প, স্কুলের গল্প, ছাত্র-শিক্ষকের গল্প,  Best story, Social stories, honesty stories, school stories, student-teacher stories

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ