Ticker

20/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

বিশ্বাস নেই ।। মানিক রায়

 



 

-আমি পারব।

কথাটা বলার মধ্যে এতটাই আত্মবিশ্বাস ছিল যে আমাকে কেউ আর আটকাতে পারল না।

দুপুর দুপুর বেরিয়ে পড়লাম। মাস্টারকাকুকে বললাম, কাকু চিন্তা করবেন না। আমি পৌঁছে যাব। আর কাকিমাকে নিয়ে কালই ফিরব। বাড়ির সকলে দুশ্চিন্তা করবে এমন কিছু বলব না। শুধু মেজ জেঠুকে ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলব। কাকু আসস্থ হলেন।

বাবা জানে, আমি পারব। কারণ কোথাও যেতে হলে কিভাবে যাব, কোন বাসে উঠব, কোথায় নামব, সেই বাড়ির সম্পূর্ণ ঠিকানা কি, বাড়ির সদস্যদের কি নাম, তারা কে, কি কাজ করে এমনি নানান সাত-সতের পাখি পড়ার মতো বাবা আমাকে এমন ভাবে ঠোঁটস্থ করিয়ে রাখে যে, আমি যেন সেই জায়গাটায় রোজই যাওয়া আসা করি। অচেনা জায়গাও আমার কাছে অতি পরিচিত হয়ে থাকে সর্বদাই।

মা বলল, দেখে-শুনে যাস। বাসস্ট্যান্ড থেকে ভ্যান রিক্সায় যাস। রাত হয়ে গেলে বাসস্ট্যান্ডের কোনো দোকানদারকে বলবি, কাকু আমাকে একটু পৌঁছে দেবেন? অতটা রাস্তা একা একা যাবি না।

ধর্মতলা থেকে সি এস টিসি বাস ছাড়ল সাড়ে চারটে নাগাদ। রাজগ্রাম পৌঁছাতে মোটামুটি সাড়ে চার ঘন্টা লাগবে। দূরপাল্লার বাস, দুরন্ত গতিতে ছুটবে। একথাটা জানাই ছিল। জানলার পাশে বসে বেশ মজাও লাগছে।

কাকুদের বাড়ি এর আগে দু'বার গিয়েছি। লাল মাটির দেশ। পথ-ঘাট সব লাল কাঁকরে ভরা। সবুজ মাঠের মধ্যে দিয়ে লাল রঙের কাঁকুরে পথ চলে গিয়েছে এঁকে-বেঁকে। দেখতে অপরুপ লাগে।

কাকুদের বাড়ি গিয়ে দুবারই আমরা ঘুরে এসেছি জয়রামবাটি, কামারপুকুর, বিষ্ণুপুর। শ্রী রামকৃষ্ণ-সারদা দেবীর জন্মস্থান ঘুরে আমার যত না ভালো লেগেছে তার থেকে অনেক বেশি মন ভরে গিয়েছে বিষ্ণুপুর ঘুরে। মনে হয়েছে সুযোগ পেলে আবারও আসব। রাজা-রাজাদের ঐতিহাসিক ওই অঞ্চল আমার মনকে হাতছানি দিয়ে ডাকে বারে-বারে।

কাকুদের বাড়িতে একটা দারুণ মজার জিনিস দেখেছিলাম। এই অঞ্চলে যে ক'টা বাড়িতে গিয়েছি সে ক'টা বাড়িতে দেখেছি প্রচুর পরিমাণে তীর-ধনুক, বল্লম প্রভৃতি মজুত। দরজার পাশে পাশে বড়ো বড়ো বল্লম আছে। বাড়ির দোতলায় অসংখ্য ছোটো ছোটো ঘর বানানো, সামনের দিকে স্কয়ার ফুটের চৌকো ফাঁক। জেনেছিলাম, এখানে ডাকাতের উপদ্রব। ওই ঘরগুলো থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে তীর ছোড়া হয়। জানি না আমার মতো বিচ্ছু তীরগুলো নিয়ে যেন সবসময় মেতে না থাকি তাই কি না, বলা হয়েছিল এই তারগুলোতে বিষ আছে।ফুটলে নাকি পাঁচ মিনিট সময় লাগবে না অল্কা পেতে।

বড়ো ও মেজ জেঠু দুটি স্কুলের হেডমাস্টার। কয়েক বছর আগে পাশের বাড়িতে ডাকাত পড়েছিল। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে বাড়ির বড়োরা ভেবেছিল বাপ-ছেলের রোজকার ঝগড়া ঝামেলা। ছুটে গিয়েছিল। ডাকাত দলের সঙ্গে মোলাকাত, পরেই মোকাবিলাও। সে সময় ডাকাতদের ছোঁড়া একটা বোমা বড়ো জেঠুর একেবারে পাশে পড়ে জেঠুর কানদুটো কালা হয়ে দিয়েছিল। তার কিছুদিন পর থেকে লক্ষ্য করা গেল মানুষটার মধ্যে একটা পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে। ধীরে ধীরে অপ্রকৃতস্থ হয়ে পড়লেন তিনি।

বাড়ির সর্বময় কর্তা এখন মেজ জেঠু। মেজ জেঠু তো আবার হোমিওপ্যাথিটাও জানেন। জানেন আরো অনেক কিছু। যাত্রাদলের মেক-আপ, কত মজার ম্যাজিক, জমি-জমা মাপার কথাও শুনেছি। কথায় কথায় বলেন, দাঁড়া, একটা ম্যাজিক দেখাচ্ছি। মেজ জেঠুকে আমার দারুণ ভালো লাগে। খেতে বসে মানুষটা পাতে একটাও খাবার ফেলে রাখেন না। কষ্ট হলেও পাত পরিষ্কার। খাবার পরে মুখটাও বেশ আকর্ষণীয় তাঁর, যেন দাঁত মাজেন। এই দুটো গুণই এখন আমার ঝোলায়।

সেজ জেঠু ব্যাঙ্কের অফিসার। রাশ ভারী লোক। ধারে কাছেও  ঘেঁসি না তাঁর।

তবে ছোটোকাকুকেও আমার অসম্ভব ভালো লাগে। কাকুর মৌমাছি চাষ আর বাড়িতে গোবর গ্যাসের তদারকি করা দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। সময় পেলেই জমিতে চাষ দেখাতে নিয়ে যায়। পুকুরের জাল নিয়ে নেমে পড়ে আমাদের নিয়ে, আরো কত কি!

বাড়িটাতে গিয়ে আরো বেশি আনন্দ লাগে আমার বয়সি ভাই-বোনেদের জন্য। সব সময় যেন একটা চাঁদের হাট। আলো আর আলো।

পৌনে ছ-টা নাগাদ আরামবাগ পৌঁছালাম। বর্ষার দিন। পূব আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। পরিবেশ থমথমে হয়ে রয়েছে। যেন সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে অনেকক্ষণ। ফুরফুরে ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে। মনে হচ্ছে কোথাও বৃষ্টি হয়েছে। এখানে মিনিট পনের বাস দাঁড়াবে, তারপর আবার যাত্রা বিষ্ণুপুরের উদ্দেশ্যে। আমি বাস থেকে নেমে এক প্যাকেট বিস্কুট কিনে আর স্ট্যান্ডের টিউবওয়েল থেকে জলের বোতলটা ভরে নিলাম।

ডাক্তারবাবু কাকুকে এমন ভাবে বললেন কথাটা, না না, আমি পারব না। আপনি বরং অন্য কোনো ডাক্তার দেখান। এ আমি রিক্স নিতে পারব না। জন্ডিস পেকে গেছে। কাকু তো শুনেই থ। ছোটো হলেও আমি বেশ বুঝেছি একটা ডাক্তারের এমন ভাবে কথা বলা একেবারেই উচিত হয়নি। রোগী তো ওনার কথাতে আরো রোগী হয়ে যাবে। স্বাভাবিকভাবে কাকুও ভয় পেয়ে গিয়েছেন। মাস কয়েক আগে বিয়ে হয়েছে। পড়াশুনার জন্য কাকিমা থেকে গিয়েছেন গ্রামের বাড়িতেই।

কাকুর মন খারাপ। প্রায় এই কাঁদেন তো সেই কাঁদেন। বললেন, তোর কাকিমাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে। পারবি যেতে? আমি এক কথায় হ্যাঁ করে দিলাম। শুধু কি হ্যাঁ, বেশ জোরের সঙ্গেই বললাম, আমি পারব।

আরামবাগ থেকে আধঘন্টা  আসার পরই বাসটা হঠাৎ বিগড়াল। একটা দমকা ঝাঁকুনির পর বাসটা রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে পড়ল। ড্রাইভার, কন্ট্রাক্টর বাস থেকে নেমে গাড়ির তলায় কি যেন দেখাদেখি করতে লাগল। যাত্রীদের মধ্যেও অনেকে নামল। দেখাদেখি আমিও। বুঝলাম না কিছুই। এদিকে আকাশ কালো হয়ে আসছে ক্রমশ। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঘন ঘন বজ্রপাত। কিছু যাত্রী অন্য গাড়ি ধরে চলে গেলেন। আমি গাড়ির কন্ট্রাক্টরকে জিজ্ঞেস করলাম রাজ গ্রামে যাওয়ার কি কোনো বাস আছে? কন্টাকটারের উত্তরটা শুনে অগত্যা অপেক্ষাতেই থাকতে হল। কিছুক্ষণের মধ্যে মুষলধারে বৃষ্টি নামল। কন্ট্রাকটর গাছের তলায় ঢুকে শুএ পড়ল যন্ত্রপাতি দিয়ে তাকে রাখতে সাহায্য করতে থাকল। আমার মতো কয়েকজন যাত্রী নিয়ে বাসটা পথের মাঝে অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল। প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের চেষ্টায় ড্রাইভার আর কন্ট্রাক্টর বাসটাকে চালু করতে সক্ষম হল।

রাজগ্রাম যখন পৌঁছালাম তখন রাত অনেক হয়ে গেছে। গ্রামে আটটা বাজলেই রাত হয়ে যায়। তার ওপরে আবার ভরা বর্ষা। চারিদিক নিরঝুম ঘুটঘুটে অন্ধকার। লোকজনও নেই বাসস্ট্যান্ডে। একটাও ভ্যানরিক্সা তো দূরের কথা। বাস থেকে নেমে ছুটে গিয়ে দাঁড়ালাম একটা বন্ধ দোকানের চালার নিচে।

কি করব, পথটা সামান্য নয়! মোটামুটি পৌনে এক ঘণ্টা লাগবে হাঁটলে। যেভাবে বৃষ্টি হয়েই চলেছে এর মধ্যে যাবই বা কি করে! সঙ্গে ছাতা নেই, টর্চ নেই। বাস থেকে কোনো যাত্রীও নামল না এখানে। না গিয়েও উপায় নেই। কতক্ষণই বা এভাবে একা একা দাঁড়িয়ে থাকব! খিদেও পেয়েছে জোর। অগত্যা বৃষ্টি মাথায় করে হাঁটতে শুরু করলাম।

দোকানের চাল থেকে যেই না বেরিয়েছি অমনি রাস্তার ওপার থেকে একটা লোক ডেকে উঠল, ও খোকা কোথায় যাবে গো? গা-টা প্রথমে শিউরে উঠল। তারপর যা দেখলাম প্রাণ ফিরে পাওয়ার মতো।

-বিশ্বাস করো না?

আরে! পালের ভাইপো? কি ব্যাপার, এত রাতে একা একা?

তারপর বিশ্বাস করি পৌঁছে দিলেন বাড়ি পর্যন্ত। যেতে যেতে কাকুর খোঁজ-খবর নেওযা ছাড়াও, কাকুর বিয়ের সময়কার কত কথার স্মৃতিচারণ। হাঁটছি তো হাঁটছি, পথ য়েন আর ফুরায় না।

বড়ো ঝিলের ধার ঘেঁষে বাঁশবাগানের মধ্য দিয়ে পথটা পেরোতেই মিনিট পনেরো-কুড়ি লেগে গেল। অন্ধকারে কাকুকে এই হারিয়ে ফেলি তো সেই হারিয়ে ফেলি। কিছুই যেন দেখা যায় না। বললাম, কাকু তুমি তো একটা টর্চ নিয়ে বেরোতে পারো। কাকু বলল, ও আমাদের অভ্যাস আছে। টর্চ-ফর্চ ওসব লাগে না। তুই দেখে আয ঠিক করে। হোঁচট খেয়ে পড়িস না যেন আবার।

বাঁশ বাগান পেরিয়ে পাশ দিয়ে হেঁটে চলেছি। খুব ভালো মনে আছে এখানটা ধূ-ধূ ফাঁকা মাঠ। যেদিকে তাকানো যায় দূরে দূরে বাড়ি-ঘর, গাছ-পালা। কিন্তু অন্ধকারে ওসব যেন হাওয়া হয়ে গেছে। ঠিক এখান থেকে পথটা নিচে নেমে যাচ্ছে তো যাচ্ছে! শ্মশানটার কাছে যেন সমভূমি। আবার গ্রামে ঢোকার আগে দুটো বাঁক পেরিয়ে পথটা উঁচু হতে থাকবে। গা-টা কেমন ছমছম করে উঠল।

কাকু বলল, কি রে ভয় পেলি নাকি?

-বাব্বা এত অন্ধকারেও তুমি আমার শিউরে ওঠা দেখতে পেলে?

-পাব না? আমাকে তো সব নজরে রাখতে হবে। তুই পালের ভাইপো বলে কথা। অতো দায়িত্ব জানিস আমার?

-দায়িত্ব?

-হ্যাঁ। দায়িত্ব না! পাল আমার ছেলেবেলার বন্ধু। এ বন্ধুত্ব যে-সে বন্ধুত্ব নয় বুঝলি! একেবারেই যাকে বলে মানিকজোড়।

দূরে একটা বজ্রপাত হল খুব জোরে। বললাম, আমার খুব ভয় করছে, তুমি একটু আস্তে হাঁটো না কাকু।

-ভয় কিসের? আমি তো আছি। আমি যদি না আসতাম তো তুই একা একাই এই পথটা পার হতিস?

-হ্যাঁ তা হতাম। তবে তোমাদের এখানে যা-

-ভূত!

-না, না। ভূত-টুতে আমার ভয় নেই। ওসব কিছু আছে টাছে বলেও আমি বিশ্বাস করি না।

ঠিক এই সময়ে শ্মশানটা থেকে একটা বাচ্চার কান্না ভেসে এল।

-কি রে, তুই বলছিস ভূত-টুত নেই। আর ওদিকে শ্মশানে কি মানুষের বাচ্চা কাঁদছে তাহলে?

-না গো কাকু। তুমি জানো না শকুনের বাচ্চার কান্না আর মানুষের বাচ্চার কান্নার শব্দ একইরকম শুনতে লাগে। এগুলো শকুনের বাচ্চাই হবে। আমি তো ভয় পাচ্ছি তোমাদের এখানকার তীর-ধনুকের। কোথা থেকে যে কে একটা তীর ছুড়ে দেবে, কে জানে। পাঁচ মিনিটেই অক্কা।

-বাঃ বাঃ! তুইতো বড্ড সাহসী। ভূতে ভয় পাস না। আমার তো আবার ভূতের ভয়টাই বেশি।

-বেশি তো এত রাতে বের হবার দরকার কি?

-বের-ই কি আর সাধ করে! নে তোর পালকাকুর বাড়ি চলে এসেছে।

-বাড়ি কি আর চলে এসেছে? চলে চলে এলাম তো আমরাই।

-ডাক এবার। আমিও চলি রে।

-সেকি! তুমি ভিতরে যাবে না?

-না। আজ আর সময় নেই। ফিরতে হবে তুই যা, দরজায় ধাক্কা দিয়ে জোরে জোরে ডাক গে যা।

বারকয়েক ডাকাডাকির পর ছোটোকাকু বল্লম হাতে আর মেজ জেঠু টর্চ নিয়ে দরজায় এলেন। দরজা খোলার আগে ভালো করে জিজ্ঞেস করে নিলেন, আমি কে? কোথা থেকে এসেছি।

দরজা খুলে তো অবাক! আমি যে একা একাও আসতে পারি এ যেন বিশ্বাসই হয় না ওঁদের। একটু দুর্ভাবনায়ও পড়লেন বটে। বললেন, বাড়ির সবাই ভালো তো? তোর বাবা-মা, কাকু?

বললাম, হ্যাঁ, সবাই ভালো।

-তবে এত রাতে, তুই একা একা?

-আসলে বেরিয়েছিলাম সকাল-সকাল। পথে বাসটা খারাপ হয়ে যেতেই রাত হয়ে গেল।

জেঠুর বিশ্বাস হল না। বললেন, হাত-পা ধুয়ে আমার ঘরে আয়। বাড়ির আর সবাই মানে বড়োদের মধ্যেই ঠাকুমা, বড়ো জেঠিমা, মেজো জেঠিমা, ছোটোকাকু আমাকে ঘিরে ধরলেন। ছোটোদের তো তখন মাঝরাত।

বললেন, কি রে সত্যিই সবাই ঠিকঠাক আছে তো?

মিথ্যে করেই বললাম, হ্যাঁ সবাই ঠিক আছে। কোনো দুশ্চিন্তা করার কারণ নেই?

-তবে কি তুই বাড়ি থেকে পালিয়ে এলি নাকি রাগ-টাগ করে?

-না-না। পালিয়ে আসব কেন?

-তাছাড়া এই বৃষ্টির মধ্যে বাস রাস্তা থেকে একা একা এলিই বা কি করে? ভ্যান তো পাসনি নিশ্চয়ই? ভয় করেনি তোর?

-ভয় করবে কেন? তাছাড়া বিশ্বাসকাকুর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। কাকু তো আমাকে দিয়ে গেলেন এখান পর্যন্ত।

-বিশ্বাস? মানে তোর মাস্টারকাকুর বন্ধু স্বদেশের কথা বলছিস?

-হ্যাঁ বাস থেকে নেমে দেখলাম সব ফাঁকা। সামনের দোকানটার নিচে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। তারপর একা একাই আসব বলে পা বাড়াতেই বিশ্বাসকাকু পিছন থেকে ডাকল।

সবাই এ-ওর মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে থাকল। হাবভাব দেখে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কেন? আমি কি মিথ্যে বলছি মনে করেছ?

ছোটকাকু ধমকে উঠল, তুই থাম। তোর সত্যিটা যে এতটাই মিথ্যে তা যদি তুই জানতিস।

-মানে?

-মানে আবার কি? বিশ্বাসদা মাসখানেক আগে মারা গেছে গাড়ি চাপা পড়ে।

সেদিন তো বটেই সতের-আঠের বছর আগের সেই কথাটায় আজও আমার বিশ্বাস নেই।

 

অলংকরণ- অমর লাহা

প্রকাশিত-  ছেলেবেলা । বর্ষা ১৪১৭

 

Topic : ভূতের গল্প, Ghost Story, সেই রাতের গল্প, The story of the night

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ