Ticker

20/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

আজও নিজেদের রক্ষা করে চলেছে পশুপক্ষীকূল ।। দীপালি রায়


প্রিয় বন্ধুরা,

কি এক আশ্চর্য বিতিকিচ্ছিরি সময়ের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছি বলো তো আমরা। মুখে মাস্ক পরো, একজন আরেকজনের থেকে দূরে থাকো, বারেবারে সাবান দিয়ে হাত পরিস্কার করো। সবসময় যেন একটা ভয়, একটা আতঙ্ক আমাদের পিছু করে বেড়াচ্ছে। না পারছি স্কুল-কলেজে যেতে, না পারছি বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে, খেলতে যেতে। না-না আর না-এর নানান বিধিনিষেধের বেড়াজাল আমাদের আষ্টেপিষ্টে বেঁধে রেখেছে।

বড়োরা তো বড়োই, তাঁরা চলেন তাঁদের মতো। আমরা না পারি ভালো-মন্দ কিছু বুঝতে, না পারি ইচ্ছেমতো চলতে। নিষেধ আর বারনের পাহাড়ে যেন চাপা পড়ে যাচ্ছি ক্রমশঃ। ভাল্লাগে না আর।

আসলে কি জানো, এই না জানা আর না মানাটাই আমাদের আজ এমন জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে। কিছু বই পড়ে আমরা দিগ্গজ হয়ে গেছি। প্রকৃতির পাঠশালা থেকে যে আমাদের পূর্বসূরীরা শিক্ষা গ্রহন করেছিলেন তা আমরা অতি আধুনিক যুগে এসে বেমালুম ভুলে গেছি। পাত্তাই দিই না আর ওসব বস্তাপচা-পুরনো-সেকেলে ধ্যান-ধারণাকে। অথচ দেখো আজও কেমন নিজেদের রক্ষা করে চলেছে পশুপক্ষীকূল নানান বিপদ আর দূর্যোগের মধ্যেও।

সব পাখি তো আর চড়ুয়ের মতো মানুষের বাড়ির চিলেকোঠায় বাসা বাঁধে না, গাছের মগডালেই তাদের থাকার জায়গা বানাতে দেখি আমরা। প্রচণ্ড ঝড়েও তারা টিকে থাকে। বন্যায় আমরা ভেসে যাই, বিজ্ঞানের নানানরকম সহায়তা থাকা সত্বেও, পশুপক্ষীরা কিন্তু এতটা উন্নত না হয়েও আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে। পিঁপড়েরা একে-অপরকে জড়িয়ে গোল বলের মতো হয়ে যায় বাসায় জল উঠলে। সেই গোল বল ভাসে জলের মধ্যে, ভাসতেই থাকে যতক্ষণ না ডাঙা পায়, যতক্ষণ না জল কমে। কী আশ্চর্য প্রখর বুদ্ধি। এত উন্নত হয়েও আমরা অবাক হই ওদের কর্মকাণ্ড দেখে। শিক্ষা নিই না।

না-না, নিই না বললে ভুল বলা হবে। আমরা তো ওদের থেকেই অনেক-অনেক শিখেছি, নিয়েছি। প্রকৃতিই আমাদের শিখিয়েছে নানাভাবে। শিখতে-শিখতেই তো আমরা একটু-একটু করে অহংকারী হয়ে গেছি। আমাদের অহংকার মাটি থেকে অনেক দূরে করে দিয়েছে আমাদের। ক্রমাগত আমরা ভুলে গেছি আমাদের শিক্ষার প্রাথমিক পাঠশালার কথা।

প্রকৃতি এক আশ্চর্য পাঠশালা। অপরূপ সৌন্দর্যের মধ্যেই সে ধরে রেখেছে শিক্ষার জগত। আমরা শুধু নিয়েই গেছি তার থেকে, দিইনি কিছুই। মা যেমন সন্তানের কাছে কিছুই আশা করে না, প্রকৃতি মাও তেমনই। কিন্তু বেয়াদপি তো সহ্য করার নয়। কান মুলে-বকেও তো মাকে শাসন করতে হয় কখনো-কখনো। প্রকৃতি মাও যে আর নীরব থাকতে পারছে না, এটা বুঝতে হবে আমাদের। আমাদের ভোগলিপ্সা এতটাই বেড়ে গেছে যে আমরা প্রকৃতি মাযের ওপর আঘাত হানতে দ্বিধা করি না এখন।

আজকের এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির জন্য তো আমরাই দায়ী। দোষ দেব কাকে। পিঁপড়ের মতো যদি আমরা সঙ্ঘবদ্ধ না হতে পারি তো আমরা ভয়ঙ্করের মধ্যে ভেসে যাব। এখনও অনেক মানুষ মাস্ক পরছে না, দূরত্ব মানছে না, ভয়ঙ্করের মধ্যেও কি ভীষণ সাহসী। এই সাহস তো প্রকৃতপক্ষে ভালো কথা নয়, মুর্খতা ছাড়া কী বলা যায় একে জানি না। চাইলে যে আমরাই পারি পরিস্থিতি স্বল্প সময়ের মধ্যেই স্বাভাবিক করে তুলতে পিঁপড়েদের মতো এক হয়ে, তা আমরা ধর্তব্যের মধ্যেই আনি না।

তবুও আমরা আশা করব, প্রত্যাশায় বুক বাঁধব পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এই ভেবে। আমরা আশাবাদী। এত সুন্দর জগতটা কিছু দুষ্টু-অবুঝ মানুষের জন্য শেষ হয়ে যেতে পারে না। অন্ধকার কেটে আলো ফুটবে। পৃথিবী রোগমুক্ত হবেই।

এসো, এই অতিমারীর সময়ে আমরা আমাদের মন ভালো রাখি। লেখাপড়ার পাশাপাশি সৃষ্টিমূলক নানারকম কাজ আর কিছু ভালো লাগা, ভালোবাসার জিনিস নিয়ে থাকি। চিরকালের ছেলেবেলার ওয়েবসাইটে তোমরা অনেকেই ইতিমধ্যে আসছ নিয়মিত। প্রতিদিনই পাঠক সংখ্যা বেড়ে চলেছে হু-হু করে। আমরা আনন্দিত, আমরা খুশি। ওয়েবসাইটে প্রতিদিনই অনেক কাজ থাকে, শুধুমাত্র লেখা আর ছবি পোস্ট নয়, এছাড়াও অনেক কিছু। তোমাদের দাদাভাই মানিক রায়, আমি তো কাজ করে চলেছি তা তোমরা বেশ বুঝতে পারো জানি, কিন্তু আমাদের দুজনের থেকেও যিনি সর্বদাই সজাগ-সতর্ক থেকে অপলক দৃষ্টিতে ওয়েবসাইটের রক্ষণা-বেক্ষণ করে চলেছেন পর্দার পিছন থেকে তিনি আমাদের সকলের প্রিয় তন্ময় দাদাভাই (তন্ময় দে)। আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।

ঠাকুরপুকুর, কলকাতা থেকে বিপ্লব রায়, রানাঘাট, নদীয়া থেকে বিকাশ চক্রবর্তী, জোড়াসাঁকো, কলকাতা থেকে জয়ন্তী মণ্ডল, দাশনগর, হাওড়া থেকে তাপস বাগ, বালিগঞ্জ, কলকাতা থেকে জয়তী চট্টোপাধ্যায়, গয়েশপুর, নদীয়া থেকে দিলীপকুমার মিস্ত্রী, সিউড়ি, বীরভূম থেকে শুভ্রজিত দাস, মেচেদা, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে আকাশনীল মাইতি, আমতা, হাওড়া থেকে প্রদীপরঞ্জন রীত, জলপাইগুড়ি থেকে স্বপ্নীল রুদ্র, বালি, হাওড়া থেকে দিলীপ আচার্য, ভোগপুর, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে দীপক বেরা, বাগনান, হাওড়া থেকে শুভময় বিশ্বাসরামশংকরপুর, উত্তর 24 পরগনা থেকে অর্জুন রায় প্রমুখ জানিয়েছেন চিরকালের ছেলেবেলার ওয়েবসাইট দেখে-পড়ে তাঁদের ভালো লাগার কথা। জানিয়েছেন শুভেচ্ছাও। তোমরাও জানিও ওয়েবসাইট তোমাদের কেমন লাগছে। আর আঁকা পাঠিও কিন্তু।

ভালো থেকো বন্ধুরা। সকলে সুস্থ থেকো। আর এই সময়ে অবশ্যই বড়োদের কথা মেনে চলো।

তোমাদের জন্য রইল ভালোবাসা। বড়োদের প্রতি শ্রদ্ধা।

দীপালি রায়

সম্পাদক- চিরকালের ছেলেবেলা

১৮ই বৈশাখ ১৪২৮ (২রা মে ২০২১)





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ