প্রিয় বন্ধুরা,
এক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে আমরা চলেছি। ভয়াবহ-দুর্বিষহ-অন্ধকারময়! প্রতিদিনই মনে হয়- একোন সকাল, রাতের চেয়েও অন্ধকার! পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব তো আমরাই! দিনে-দিনে নানাভাবে আমাদের সভ্যতা উন্নত হয়ে উঠছে, এতদিন তো তেমনটাই জানতাম। কিন্তু, একি! এ কেমন উন্নয়ন! ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে।
গত একবছর ধরে 'কোভিড-১৯' সারা পৃথিবী জুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে। লাখে-লাখে মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে দানব 'করোনা'। আমরা ভীত, সন্ত্রস্ত। আরো ভয় হচ্ছে এখন, একটা বছর কেটে যাওয়ার পরও নিজেদের বাঁচানোর উপযুক্ত ব্যবস্থা করে উঠতে পারিনি আমরা। না ওযুধ, না চাহিদা মতো ভ্যাকসিন, না হাসপাতালে বেড। এখন তো দিকে-দিকে অক্সিজেনেরও অভাব দেখা দিয়েছে। হাসপাতালের বেডে-বারান্দায় শুয়ে-শুয়েই অক্সিজেনের অভাবে কি নিষ্ঠুরভাবে বাধ্য হয়েই মানুষকে মৃত্যু বরণ করতে হচ্ছে। এর থেকে দুঃখ, এর থেকে যন্ত্রণার, লজ্জার আর কী হতে পারে, আমার জানা নেই।
স্বার্থপরতাই আমাদের বুঝি শেষ করে দেবে! এসব কথা তোমাদের বলা মানে তো, নিজেরই লজ্জা! তবু লিখছি তোমাদেরকেই জানানোর জন্য। লিখছি ভবিষ্যতের আশায়। দয়াময় ঈশ্বরের অসীম কৃপায় যদি এই সভ্যতা সম্পূর্ণ ধ্বংস না হয়ে যায় তো, তোমরাই দেখো- তোমাদের। আগামী পৃথিবীকে সুন্দর করে তোলার দায়িত্ব নিয়ে তোমরা বেড়ে ওঠো, বড়ো হও। মানুষের বসবাস যোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে যে খুবই প্রয়োজন মানুষেরই। আমি জানি তোমরাই সেই মানুষ। লোভী, স্বার্থপর, দুষ্টু দানবগুলোর হাত থেকে আমাদের পৃথিবীটাকে বাঁচাতে তোমরাই পারবে। তোমরাই পারবে আমাদের ভালোবাসার পৃথিবীনামক এই গ্রহটাকে ঝলমলে, সুন্দর, করে তুলতে।
সবকিছুর আগে চাই সঠিক পরিকল্পনা। কোনোকিছু গড়তে হলে আগে নিজেকে গড়তে হয়। কঠোর-কঠিন, নিরলস পরিশ্রম আর সঠিক পথ নির্বাচন ছাড়া কিন্তু তা হবার নয়। কাজেই অনেক বড়ো দায়িত্ব তোমাদের ওপর, একথা মনে রেখেই আজ-এখন থেকেই আর একদম সময় নষ্ট না করে ঝাঁপিয়ে পড়ো, নিজেদের তৈরি করার লক্ষ্যে। অনেক-অনেক জানতে হবে, অনেক-অনেক শিখতে হবে, অ-নে-ক- কিছু বুঝতে হবে দেশ ও দশের কাজ করতে হলে। নিজ-নিজ কাজের মধ্য দিয়েই দেশ সেবা সম্ভব, দশের জন্য কিছু করা সম্ভব। শুধু মনে রাখতে হবে- অনন্তকালের জন্য আমাদের জীবন নয়, আমরা প্রত্যেকেই ক্ষণেকের অতিথিমাত্র এই গ্রহের। কাজেই এসেছি যখন দাগ রেখে যাই, ভালো দাগ। যা মানুষের মঙ্গলে কাজে লাগে, যাতে আমাদের ভালোবাসার পৃথিবীটা আরো সুন্দর হয়ে ওঠে। সততার সঙ্গে আমাদের জীবন অতিবাহিত হোক সুন্দরের আঙিণায়।
চিরকালের ছেলেবেলার ওয়েবসাইট মাত্র ৯ দিনেই ৯ হাজার পাঠকের ছোঁয়া পেল। আমরা
আনন্দিত, আমরা
আপ্লুত-আহ্লাদিত। অনেক বন্ধুরা এখনো হয়ত জানে না, ওয়েবসাইটের কথা। তোমরাই জানিয়ে দিও তাদের
লিংকটি শেয়ার করে। আর কেমন লাগছে, ওয়েবসাইট জানাতে
ভুলো না কিন্তু কমেন্ট বক্সে। পাঠিয়ে দাও তোমাদের আঁকা। আঁকা পাঠানোর সঙ্গে মনে
করে নিজের একটা ছবি, নাম, সম্পূর্ণ ঠিকানা, ফোন নম্বর অবশ্যই জানাবে।
আমাদের যাঁরা বড়ো, অনুরোধ জানাই, চিরকালের ছেলেবেলার বন্ধুদের জন্য আপনার সুন্দর লেখাটি পাঠিয়ে সহায়তা করুন। আমরা বরাবরই আপনাদের সহায়তা পেয়েছি নানান কাজে, পেয়েছি প্রশ্রয়ও। ওয়েবসাইটটি সাজিয়ে তুলতেও আমরা আশাবাদী পূর্বের মতো আপনাদের সহায়তা পাব।
আরো বেশ কিছু বিভাগ ধীরে-ধীরে আসতে চলেছে। মজার ব্যাপার এই যে, আমাদের ওয়েবসাইটের লেখাগুলি প্রবাসী বাঙালীরা তো পড়তে পারছেই তাছাড়াও বিভিন্ন ভাষার মানুষ এই লেখাগুলি এক ক্লিকেই নিজ-নিজ ভাষায় অনুবাদ করে পড়তে পাচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
শেষে যে কথাটা খুবই জরুরী বলার, কোভিডকালে অবশ্যই বড়োদের কথা শুনব আমরা। অকারণে বাইরে বেরব না। মাস্ক পরব, সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলব। অযথা চোখে-নাকে-মুখে হাত দেব না। বারেবারে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেব।
সকলে ভালো থেকো। সাবধানে থেকো। রইল অনেক-অনেক ভালোবাসা। বড়োদের শ্রদ্ধা-প্রণাম।
দীপালি রায়
সম্পাদক- চিরকালের ছেলেবেলা
১১ই বৈশাখ ১৪২৮ (২৫শে এপ্রিল ২০২১)
0 মন্তব্যসমূহ